দেড় ঘণ্টা ফোনালাপ কথোপকথন ‘দুর্দান্ত’ হয়েছে : ট্রাম্প :: পশ্চিমা প্রতিষ্ঠানগুলো ফেরার অনুমতি পাবে না : পুতিন

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে একমত ট্রাম্প-পুতিন

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

২০ মার্চ ২০২৫, ১২:২৪ এএম | আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫, ১২:২৪ এএম


যুক্তরাষ্ট্রের সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ফোনে কথা বলেছেন। তাদের এই ফোনালাপ দেড় ঘণ্টা ধরে চলেছে। এই আলোচনায় ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান এবং একটি স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে দুই নেতা একমত হয়েছেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।

হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়েছেÑমার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধে শান্তি ও যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। উভয় নেতা একমত হয়েছেন যে, এই সংঘাতের অবসান একটি স্থায়ী শান্তির মাধ্যমে হতে হবে। পাশাপাশি, তারা যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে উন্নত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। দুই নেতা উল্লেখ করেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া উভয়েই এই যুদ্ধে প্রচুর সম্পদ ও প্রাণ হারিয়েছে, যা তাদের জনগণের কল্যাণে ব্যয় করা উচিত ছিল। তারা আরও বলেছেন, এই সংঘাত কখনোই শুরু হওয়া উচিত ছিল না এবং এটি বহু আগেই আন্তরিক ও সদিচ্ছাপূর্ণ শান্তি প্রচেষ্টার মাধ্যমে শেষ হওয়া উচিত ছিল।

উভয় নেতা সম্মত হয়েছেন, শান্তির পথে অগ্রগতি শুরু হবে ‘জ্বালানি ও অবকাঠামো’ যুদ্ধবিরতি এবং কৃষ্ণসাগরে সামুদ্রিক যুদ্ধবিরতির বাস্তবায়ন নিয়ে কারিগরি আলোচনা দিয়ে। চূড়ান্ত লক্ষ্য হবে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি এবং স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা। এসব আলোচনার কাজ মধ্যপ্রাচ্যে অবিলম্বে শুরু হবে। তারা আরও আলোচনা করেছেন, মধ্যপ্রাচ্য ভবিষ্যতে সম্ভাব্য সহযোগিতার একটি অঞ্চল হতে পারে, যা ভবিষ্যতের সংঘাত প্রতিরোধে সহায়ক হবে। তাঁরা কৌশলগত অস্ত্রের বিস্তার রোধের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও কথা বলেছেন এবং এ বিষয়ে ব্যাপক আন্তর্জাতিক সহযোগিতার জন্য অন্যদের সঙ্গে আলোচনায় যুক্ত হবেন। দুই নেতা একমত হয়েছেন, ইরান কখনোই এমন অবস্থানে থাকা উচিত নয় যাতে তারা ইসরাইলকে ধ্বংস করতে পারে। উভয় নেতা বিশ্বাস করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে উন্নত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এতে বৃহৎ অর্থনৈতিক চুক্তি এবং ভূরাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জিত হবে, যখন শান্তি নিশ্চিত হবে।

কথোপকথন ‘দুর্দান্ত’ হয়েছে : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন যে মঙ্গলবার তার রাশিয়ান সমকক্ষ ভøাদিমির পুতিনের সাথে তার ‘দুর্দান্ত’ কথোপকথন হয়েছে। ‘আমি মনে করি আমাদের একটি দুর্দান্ত ফোনালাপ হয়েছে, এটি প্রায় দুই ঘন্টা স্থায়ী হয়েছিল, অনেক বিষয় নিয়ে কথা হয়েছিল এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার দিকে এগিয়ে যাওয়ার দিকে অগ্রগতি হয়েছে,’ ট্রাম্প ফক্স নিউজকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘রাশিয়া এগিয়ে রয়েছে। আপনি জানেন, তারা প্রায় ২৫০০ (ইউক্রেনীয়) সৈন্যকে ঘিরে রেখেছে।’

পশ্চিমা প্রতিষ্ঠানগুলো ফেরার অনুমতি পাবে না : যেসব পশ্চিমা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রাশিয়া ত্যাগ করে চলে গিয়েছিল, তাদেরকে আর রাশিয়ায় পুণরায় ব্যবসা করার সুযোগ দেয়া হবে না। তাদের জায়গা স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নিয়ে নিয়েছে, মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন বলেছেন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মস্কো ইউক্রেনে হাজার হাজার সৈন্য পাঠানোর পর থেকে শত শত পশ্চিমা প্রতিষ্ঠান রাশিয়া ছেড়ে চলে গেছে। কোম্পানিগুলো বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছে, কিছু বিক্রি করে দিয়েছে, অন্যরা বিদ্যমান পরিচালকদের কাছে ব্যবসা হস্তান্তর করেছে অথবা কিছু ক্ষেত্রে সম্পদ সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করেছে।

রেনো, ম্যাকডোনাল্ডস এবং হেনকেলের মতো কিছু কোম্পানি বেরিয়ে যাওয়ার সময় বাই-ব্যাক বিকল্পে সম্মত হয়েছে, যদিও এ ধরনের চুক্তির শর্তাবলী মূলত গোপন রাখা হয়েছে। মস্কোর একটি ব্যবসায়িক ফোরামে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পুতিন বলেন, তিনি সরকারকে বাই-ব্যাক চুক্তি থাকতে পারে এমন পশ্চিমা কোম্পানিগুলোর উপর নজর রাখতে বলেছেন যাতে এই ধরনের চুক্তি সক্রিয় হলে প্রতিটি মামলা সাবধানতার সাথে বিবেচনা করা হয়। পুতিন বলেন, রাশিয়ার সাথে কাজ করা ব্যবসাগুলোকে তিনি সম্মান করেন, কিন্তু যারা জোর করে বেরিয়ে গিয়েছে করেছে তাদের প্রতি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন। যেসব কোম্পানি অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চাপের মুখে তাদের সম্পদ বিক্রি করেছে এবং স্বল্প মূল্যে তাদের সম্পদ বিক্রি করেছে, তাদের একই সামান্য অর্থের বিনিময়ে পুনঃক্রয় করার অনুমতি দেয়া উচিত নয়, পুতিন বলেন। ‘যদি কোনও পশ্চিমা কোম্পানির স্থান ইতিমধ্যেই কোনও রাশিয়ান ব্যবসা দ্বারা পূর্ণ হয়ে যায়, তাহলে... যেমন আমরা বলি, ট্রেন চলে গেছে,’ পুতিন বলেন। সূত্র : বিবিসি, তাস, রয়টার্স।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত মার্কিন বিচারকরা
এবার মার্কিন শিক্ষা বিভাগই তুলে দিতে যাচ্ছেন ট্রাম্প
সবচেয়ে সুখী দেশ ফিনল্যান্ড
যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নতুন নির্দেশনা জার্মানির
ছত্তিসগড়ে সংঘর্ষ, ২২ মাওবাদী ও ১ পুলিশ নিহত
আরও
X

আরও পড়ুন

মহেশপুর বিএনপি কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা অভিযোগের তীর জামায়াতের দিকে

মহেশপুর বিএনপি কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা অভিযোগের তীর জামায়াতের দিকে

সালথায় গভীর নলকূপের পানি আনতে গিয়ে হাতুড়িপেটার শিকার মুদি ব্যবসায়ী

সালথায় গভীর নলকূপের পানি আনতে গিয়ে হাতুড়িপেটার শিকার মুদি ব্যবসায়ী

ইনশাআল্লাহ আপনি চিন্তা করবেন না, সারাদেশের মানুষের সাথে আমার দলের নেতাকর্মীরা আপনার পাশে আছে

ইনশাআল্লাহ আপনি চিন্তা করবেন না, সারাদেশের মানুষের সাথে আমার দলের নেতাকর্মীরা আপনার পাশে আছে

সিলেটে এক ঠিকাদারকে অপহরণসহ হত্যার হুমকি : আ‘লীগের এক নেতাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সিলেটে এক ঠিকাদারকে অপহরণসহ হত্যার হুমকি : আ‘লীগের এক নেতাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

আনোয়ারায় বিএনপি'র মিছিলে হামলার মামলায় আটক ২

আনোয়ারায় বিএনপি'র মিছিলে হামলার মামলায় আটক ২

ভারতের পরিকল্পনায় ক্যান্টনমেন্ট থেকে আ'লীগকে ফেরানোর ষড়যন্ত্র: যে ভয়ঙ্কর তথ্য দিলেন হাসনাত

ভারতের পরিকল্পনায় ক্যান্টনমেন্ট থেকে আ'লীগকে ফেরানোর ষড়যন্ত্র: যে ভয়ঙ্কর তথ্য দিলেন হাসনাত

স্ত্রী-ছেলেসহ রনজিত ৭৯ বিঘা জমি জব্দ, ১৩৭ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

স্ত্রী-ছেলেসহ রনজিত ৭৯ বিঘা জমি জব্দ, ১৩৭ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত মার্কিন বিচারকরা

নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত মার্কিন বিচারকরা

মাদক মামলায় নারীসহ একই পরিবারের ৩ পলাতক আসামি গ্রেফতার

মাদক মামলায় নারীসহ একই পরিবারের ৩ পলাতক আসামি গ্রেফতার

এবার মার্কিন শিক্ষা বিভাগই তুলে দিতে যাচ্ছেন ট্রাম্প

এবার মার্কিন শিক্ষা বিভাগই তুলে দিতে যাচ্ছেন ট্রাম্প

সবচেয়ে সুখী দেশ ফিনল্যান্ড

সবচেয়ে সুখী দেশ ফিনল্যান্ড

যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নতুন নির্দেশনা জার্মানির

যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নতুন নির্দেশনা জার্মানির

ঈদযাত্রায় রেলে বাড়বে কোচ

ঈদযাত্রায় রেলে বাড়বে কোচ

বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের শাস্তি সাত বছর কারাদণ্ড

বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের শাস্তি সাত বছর কারাদণ্ড

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে ঢাকায় জামায়াতের বিক্ষোভ

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে ঢাকায় জামায়াতের বিক্ষোভ

ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হলে দেশ সঠিক পথে থাকবে : আমীর খসরু

ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হলে দেশ সঠিক পথে থাকবে : আমীর খসরু

শাহতলী পীর সাহেব মাওলানা আবুল বাশারের দাফন সম্পন্ন

শাহতলী পীর সাহেব মাওলানা আবুল বাশারের দাফন সম্পন্ন

ঐকমত্য কমিশনের ৪২ প্রস্তাবে একমত নয় এলডিপি

ঐকমত্য কমিশনের ৪২ প্রস্তাবে একমত নয় এলডিপি

৯৬টি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন বাতিলে চূড়ান্ত অনুমোদন

৯৬টি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন বাতিলে চূড়ান্ত অনুমোদন

পরিবেশগত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করবে বাংলাদেশ-নেপাল

পরিবেশগত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করবে বাংলাদেশ-নেপাল